এঁটুলিবাহিত রোগ
এঁটুলিবাহিত রোগ | |
---|---|
বিশেষত্ব | সংক্রামক রোগ |
এঁটুলিবাহিত রোগ মানুষ ও অন্যান্য পশু-প্রাণীকে আক্রান্তকারী এমন কিছু রোগের দলকে বোঝায়, যেগুলি এঁটুলি নামক এক ধরনের রোগজীবাণুবাহী ক্ষুদ্র পরজীবী কীটের দংশনের কারণে সংক্রমিত হয়।[১] এঁটুলির কামড় থেকে বহু বিভিন্ন ধরনের রোগজীবাণু সংক্রমিত হতে পারে, যাদের মধ্যে রিকেটসিয়াসহ আরও অন্যান্য ধরনের ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও প্রোটোজোয়া উল্লেখ্য।[২] মানব সমাজের উপর এঁটুলিবাহিত রোগের অর্থনৈতিক প্রভাব তাৎপর্যপূর্ণ।[৩] ধারণা করা হয় বিশ্বব্যাপী গবাদি পশুদের শতকরা ৮০ ভাগই কোনও এঁটুলিবাহিত রোগে আক্রান্ত।[৪]
মানুষের মধ্যেও এঁটুলি ও এঁটুলিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে।[৫] এঁটুলি কীটেরা নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে, যার জন্য জলবায়ু পরিবর্তন অংশত দায়ী।[৬][৭] উল্টোদিকে পোষক প্রাণীর সম্প্রদায় (যেমন হরিণ, গবাদি পশু, ইঁদুর, গিরগিটি) ও সেগুলির ভক্ষকপ্রাণী সম্প্রদায়ে (যেমন শিয়াল) পরিবর্তনের কারণে এঁটুলি কীটদের সম্প্রদায়ের উপর প্রভাব পড়ছে। বন উজাড় ও আবাসস্থল খণ্ডীভবনের কারণে এঁটুলিকীটের পোষক ও খাদক প্রাণীদের বৈচিত্র্য ও লভ্যতায় পরিবর্তন আসতে পারে।[৬]
যেহেতু একটি একক এঁটুলি কীট একাধিক রোগসৃষ্টিকারক জীবাণু পুষে রাখতে পারে, তাই রোগীরা একই সাথে একাধিক রোগের দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে, এবং এর ফলে রোগনির্ণয় ও চিকিৎসা আরও বেশি কঠিন হয়ে পড়তে পারে।[২] এঁটুলিবাহিত রোগীর সংখ্যাবৃদ্ধি ও রোগের ভৌগোলিক বিস্তার বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই স্বাস্থ্যকর্মীদের অবশ্যই একই রকম বহিঃস্থ উপস্থাপনবিশিষ্ট বিভিন্ন রোগগুলিকে একে অপর থেকে পৃথক করে চিনতে আরও বেশি পারঙ্গম হতে হবে।[৮]
২০২০ সালে হিসাব অনুযায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র সিডিসি ১৮টি এঁটুলিবাহিত রোগসৃষ্টিকারক জীবাণু শনাক্ত করেছে।[৮] আর বিশ্বব্যাপী এগুলির সংখ্যা কমপক্ষে ২৭।[৬][৯][১০] ২১শ শতকে এসে আরও নতুন নতুন এঁটুলিবাহিত রোগ আবিষ্কৃত হয়েছে। আণবিক রোগনির্ণয় ও পরবর্তী-প্রজন্মের অনুক্রম নির্ণয় পদ্ধতি এইসব আবিষ্কারের জন্য অংশত ধন্যবাদার্হ।[১১]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Wenner M (১১ জুন ২০২১)। "Let's Do a Tick Check - These pervasive bloodsuckers can give you more than just Lyme disease. Here's how to protect yourself. (Interactive)"। The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০২১।
- ↑ ক খ Kumar, Manish; Sharma, Aniket; Grover, Prashant (১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯)। "Triple Tick Attack"। Cureus। 11 (2): e4064। ডিওআই:10.7759/cureus.4064। পিএমআইডি 31016091। পিএমসি 6464285 ।
- ↑ Mac, Stephen; da Silva, Sara R.; Sander, Beate (৪ জানুয়ারি ২০১৯)। "The economic burden of Lyme disease and the cost-effectiveness of Lyme disease interventions: A scoping review"। PLOS ONE। 14 (1): e0210280। আইএসএসএন 1932-6203। ডিওআই:10.1371/journal.pone.0210280 । পিএমআইডি 30608986। পিএমসি 6319811 ।
- ↑ Rochlin, Ilia; Toledo, Alvaro (১ জুন ২০২০)। "Emerging tick-borne pathogens of public health importance: a mini-review"। Journal of Medical Microbiology (ইংরেজি ভাষায়)। 69 (6): 781–791। আইএসএসএন 0022-2615। ডিওআই:10.1099/jmm.0.001206। পিএমআইডি 32478654
|pmid=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। পিএমসি 7451033|pmc=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। - ↑ "Lyme and Other Tickborne Diseases Increasing"। Centers for Disease Control (ইংরেজি ভাষায়)। ২১ অক্টোবর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০২২।
- ↑ ক খ গ Chrobak, Ula (৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২)। "Lyme and other tick-borne diseases are on the rise. But why?"। Knowable Magazine। ডিওআই:10.1146/knowable-020222-1 । সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০২২।
- ↑ Gilbert, Lucy (৭ জানুয়ারি ২০২১)। "The Impacts of Climate Change on Ticks and Tick-Borne Disease Risk"। Annual Review of Entomology। 66 (1): 373–388। আইএসএসএন 0066-4170। এসটুসিআইডি 231300522 Check
|s2cid=
value (সাহায্য)। ডিওআই:10.1146/annurev-ento-052720-094533। পিএমআইডি 33417823|pmid=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০২২। - ↑ ক খ Tick-Borne Disease Working Group. 2020 Report to Congress (পিডিএফ)। Washington, D.C.: U.S. Department of Health and Human Services। ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০২২।
- ↑ Paddock, Christopher D.; Lane, Robert S.; Staples, J. Erin; Labruna, Marcelo B. (২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬)। Changing paradigms for tick-borne diseases in the Americas (ইংরেজি ভাষায়)। National Academies Press (US)। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০২২।
- ↑ Zhao, Guo-Ping; Wang, Yi-Xing; Fan, Zheng-Wei; Ji, Yang; Liu, Ming-jin; Zhang, Wen-Hui; Li, Xin-Lou; Zhou, Shi-Xia; Li, Hao; Liang, Song; Liu, Wei; Yang, Yang; Fang, Li-Qun (১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১)। "Mapping ticks and tick-borne pathogens in China"। Nature Communications (ইংরেজি ভাষায়)। 12 (1): 1075। আইএসএসএন 2041-1723। ডিওআই:10.1038/s41467-021-21375-1। পিএমআইডি 33597544
|pmid=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। পিএমসি 7889899|pmc=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০২২। - ↑ Tokarz, Rafal; Lipkin, W. Ian (১ জুলাই ২০২১)। "Discovery and Surveillance of Tick-Borne Pathogens"। Journal of Medical Entomology। 58 (4): 1525–1535। আইএসএসএন 0022-2585। ডিওআই:10.1093/jme/tjaa269। পিএমআইডি 33313662
|pmid=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। পিএমসি 8285023|pmc=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০২২।